বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১০:৫৬ পূর্বাহ্ন

নেত্রকোনায় ঠিকাদারের দখলে কলেজের ভবন, পাঠদান বন্ধ

নেত্রকোনা প্রতিনিধি :  নেত্রকোনা: জেলার মদন উপজেলার সরকারি হাজী আব্দুল আজিজ খান ডিগ্রি কলেজ ঠিকাদারের দখলে। কলেজের মাঠ ও স্নাতক ভবন দখলে নিয়ে দু’বছর ধরে সেখানে বসবাস করছে ঠিকাদারের লোকজন। ফলে দুই বছরের বেশি সময় ধরে স্নাতকের পাঠদান বন্ধ রয়েছে।  অভিযোগ রয়েছে, কলেজ কর্তৃপক্ষের যোগসাযোসেই মাঠসহ স্নাতক ভবনটি দখল নিয়েছে ঠিকাদার। এতে কলেজে শিক্ষা কার্যক্রম নেই বললেই চলে। কলেজের অনিয়ম নিয়ে প্রতিবাদ করলেই শিক্ষার্থীদের হুমকি-ধমকি দিয়ে কলেজে আসতে নিষেধ করছেন অধ্যক্ষ। এমনি শিক্ষার্থীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। এ নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জানা গেছে, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের আওতায় মদন সরকারি হাজী আব্দুল আজিজ খান ডিগ্রি কলেজের দুইটি একাডেমি ভবনের নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। ৭ কোটি ৮৬ লাখ ৮৭ হাজার টাকা ব্যয়ে ছয় তলা একটি ভবনের নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছেন মেসার্স তামান্না এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ২০২২ সালের ১৭ আগষ্ট ভবনটির নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়।  ৫৪০ দিনের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা রয়েছে। অপর দিকে ৬ কোটি ৬৯ লাখ ৬৬ হাজার টাকা ব্যয়ে আরেকটি ছয় তলা ভবন নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছেন দেওয়ান আলী আকবর নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ২০২০ সালের ১ মার্চ নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। ১৮ মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা রয়েছে।

 সরকারি হাজী আব্দুল আজিজ খান ডিগ্রি কলেজে গেলে দেখা যায় দুইটি ভবণের নির্মাণ কাজ বর্তমানে চলমান রয়েছে। কলেজের পুরো মাঠ ঠিকাদারের দখলে। চার দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে নির্মাণ সামগ্রী। স্নাতকের একমাত্র একাডেমি ভবনটিতে বসবাস করছেন ঠিকাদারের লোকজন। কয়েকটি শ্রেণিকক্ষে রড, সিমেন্টসহ জিনিসপত্র রাখা। একটি শ্রেণিকক্ষে চলছে রান্নার কাজ। তিন তলা পুরো ভবনেই ঠিকাদারের দখলে।  কলেজের স্নাতক শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ, আজিজুল হক, পিপুল খান বলেন, আমরা স্নাতক প্রথম বর্ষ থেকে দ্বিতীয় বর্ষ শেষ করলাম। কিন্তু একদিনও পাঠদান নিতে পারিনি। কারণ দুই বছরের বেশি সময় ধরে স্নাতক ভবনটি ঠিকাদারের দখলে। এ নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ আজ পর্যন্ত কোনো রকম ব্যবস্থা নেয়নি। তাই স্নাতকের শিক্ষার্থীরা কলেজে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। 
সরকারি হাজী আব্দুল আজিজ খান ডিগি কলেজ শাখার ছাত্রলীগের যুগ্ম আহব্বায়ক কায়েস আকন্দ বলেন, কলেজে অনিয়মের কোনো শেষ নেই। অনিয়মের প্রতিবাদ করলেই হুমকি-ধমকি দিয়ে কলেজে আসতে নিষেধ করেন অধ্যক্ষ। এমনকি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেন। কিছু দিন আগে অতিরিক্ত রেজিষ্টেশন ফি নেওয়ার প্রতিবাদ করায় কলেজ শাখার ছাত্রলীগের আহ্বায়ককের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছেন তিনি। 

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তামান্না এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধি পলাশ মিয়া জানান, আমার লোকজন ভবনে বসবাস করছেন এটা সত্য। কিন্তু আমরা তো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেই থাকছি। এ বিষয়ে আমাদের কিছু না বলে পিন্সিপালের সঙ্গে কথা বলেন।

মদন সরকারি হাজী আব্দুল আজিজ খান ডিগি কলেজের অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিন বলেন, স্নাতক ভবনে ঠিকাদারের লোকজন বসবাস করছে। এ জন্য ঠিকাদারের লোকজনদের আমি ডেকেছিলাম। তারা বলছে ছাদ ঢালাই শেষ হলেই স্নাতক ভবনটি ছেড়ে দিবে। কলেজের মাঠে দখলের বিষয়ে তিনি বলেন, ঠিকাদারের লোকজনকে বলব মাঠ যেন দ্রুত পরিষ্কার করে দেয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335